করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত যে বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন

0
7661
Covin-19-Corona Virus Hotline BD
Covin-19-Corona Virus Hotline BD

হোম কোয়ারেন্টাইন:

কোনো ব্যক্তি যখন নিজের বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনের সব নিয়ম মেনে, বাইরের লোকজনের সঙ্গে ওঠাবসা বন্ধ করে আলাদা থাকেন, তখন তাকে হোম কোয়ারেন্টাইন বলে। সাধারণত, সম্প্রতি আক্রান্ত দেশ থেকে ঘুরে না এলে রোগীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।

এ ক্ষেত্রেও ন্যূনতম ১৪ দিন ধরে আলাদা থাকার কথা। কোনো ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে ঘুরে এলে, বা রোগীর সংস্পর্শে এলে তার শরীরেও বাসা বাঁধতে পারে কোভিড-১৯। বাসা আদৌ বেঁধেছে কি না বা সে আক্রান্ত কি না এটা বুঝে নিতেই এই ব্যবস্থা নিতে হয়।

[the_ad id=”1270″]

হোম কোয়ারেন্টাইনে যা যা করা যাবে:

পরিবার বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ফোন, মোবাইল বা ইন্টারনেটে যোগাযোগ রাখতে পারেন

কোনো শিশুকে কোয়ারেন্টিনে রাখতে হলে তার জন্য প্রযোজ্যভাবে বোঝাতে হবে। পর্যাপ্ত খেলার সামগ্রী দিতে হবে এবং খেলনাগুলো খেলার পরে জীবাণুমুক্ত করতে হবে

খাওয়া, হালকা ব্যায়ামের মতো দৈনন্দিন রুটিন মেনে চলতে হবে। বড় কোনো অসুস্থতা না থাকলে বাসায় বসে অফিসের কাজ করতে বাধা নেই।

বইপড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখার পাশাপাশি কোয়ারেন্টিনের নিয়মের সঙ্গে পরিপন্থি নয় এমন যে কোনো বিনোদনমূলক কাজে কোনো সমস্যা নেই

[the_ad id=”1270″]

ঘরে থাকতে হবে যেভাবে

আলো বাতাসের সুব্যবস্থা সম্পন্ন আলাদা ঘরে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের থেকে আলাদাভাবে থাকতে হবে। তা সম্ভব না হলে অন্যদের থেকে অন্তত এক মিটার বা ফুট দূরে থাকতে হবে। আলাদা বিছানায় ঘুমাতে হবে

যদি সম্ভব হয় তাহলে আলাদা গোসলখানা বা টয়লেট ব্যবহার করতে হবে। সম্ভব না হলে অন্যদের সঙ্গে ব্যবহার করতে হয় এমন স্থানের সংখ্যা কমাতে হবে এবং ওই স্থানগুলোতে জানালা খুলে রেখে পর্যাপ্ত আলোবাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে

বুকের দুধ খাওয়ানএমন মা তার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াবেন। তবে শিশুর কাছে যাওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার এবং ভালোভাবে হাত ধুতে হবে

কোয়ারেন্টাইন:

করোনার জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার পরেই তার উপসর্গ দেখা দেয় না। অন্তত সপ্তাহখানেক সে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে জানে। তাই কোনো ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে ঘুরে এলে বা রোগীর সংস্পর্শে এলে তার শরীরেও বাসা বাঁধতে পারে কোভিড-১৯। বাসা আদৌ বেঁধেছে কি না বা সে আক্রান্ত কি না এটা বুঝে নিতেই কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয় রোগীকে। অন্য রোগীদের কথা ভেবেই কোয়ারেন্টাইন কখনো হাসপাতালে আয়োজন করা হয় না। করোনা হতে পারে এমন ব্যক্তিকে সরকারি কোয়ারেন্টাইন পয়েন্টে রাখা হয়।

[the_ad id=”1270″]

কমপক্ষে ১৪ দিনের সময়সীমা এখানেও। এই সময় রোগের আশঙ্কা থাকে শুধু, তাই কোনোরকম ওষুধপত্র দেয়া হয় না। শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়। বাইরে বের হওয়া বন্ধ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। যেহেতু রোগের জীবাণু ভিতরে থাকতেও পারে, তাই মাস্ক ব্যবহার করতেও বলা হয়। বাড়ির লোকেদেরও এই সময় রোগীর সঙ্গে কম যোগাযোগ রাখতে বলা হয়।

আইসোলেশন:

কারো শরীরে করোনা ধরা পড়লে তাকে আইসোলেশনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। আইসোলেশনের সময় চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে থাকতে হবে রোগীকে। অন্য রোগীর কথা ভেবে হাসপাতালে আলাদা জায়গা তৈরি করা হয় তাদের জন্য। অন্তত ১৪ দিনের মেয়াদে আইসোলেশন চলে। অসুখের গতিপ্রকৃতি দেখে তা বাড়ানোও হয়। আইসোলেশনে থাকা রোগীর সঙ্গে বাইরের কারো যোগাযোগ করতে দেয়া হয় না। তাদের পরিজনের সঙ্গেও এই সময় দেখা করতে দেয়া হয় না। একান্ত তা করতে দেয়া হলেও অনেক বিধিনিষেধ মানতে হয়।

[the_ad id=”1270″]

এই অসুখের কোনো প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয়নি। তবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এই সময় কিছু অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দিয়ে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায় এমন কিছু ওষুধ ও পথ্য দিয়ে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হয়। যাদের শরীরে এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি ও করোনার প্রকোপ অল্প, তারা এই পদ্ধতিতে সুস্থও হন। যাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ও রোগের হানা বড়সড় রকমের, তাদের পক্ষে সেরে ওঠা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

যে বিষয়গুলো অবশ্যই মেনে চলবেন এই করোনা প্রাদুর্ভাব এ

মাস্কের ব্যবহার

বাড়ির অন্য সদস্যদের সঙ্গে একই ঘরে অবস্থান করলে, বিশেষ করে এক মিটারের মধ্যে আসার সময় কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তি মাস্ক ব্যবহার করবেন। অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মাস্ক পরে থাকার সময় হাত দিয়ে ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে

মাস্কের সঙ্গে সর্দি, থুতু, কাশি, বমি লেগে গেছে সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক খুলে ফেলতে হবে এবং নতুন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহাহৃত মাস্ক ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলতে হবে এবং সাবান পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে

[the_ad id=”1270″]

বারবার হাত ধোয়া

সাবান পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক মুখ স্পর্শ করা যাবে না

সাবানপানি ব্যবহারের পর টিস্যু দিয়ে হাত শুকিয়ে নিতে হবে। টিস্যু না থাকলে শুধু হাত মোছার জন্য নির্দিষ্ট তোয়ালে বা গামছা ব্যবহার করা যাবে। সেটি ভিজে গেলে বদলে ফেলতে হবে। আর কেউ তা ব্যবহার করবেন না

হাঁচিকাশি শিষ্টাচার

কাশি শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে। হাঁচিকাশির সময় টিস্যু পেপার, মেডিকেল মাস্ক, কাপড়ের মাস্ক বা বাহুর ভাঁজে মুখ নাক ঢেকে রাখতে হবে এবং ২০ সেকেন্ডের নিয়ম মেনে হাত ধুতে হবে

ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করা যাবে না

কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তি তার ঘরেই খাবেন। তার বাসনপত্র, থালা, গ্লাস, কাপ, তোয়ালে, বিছানার চাদর অন্য কারো সঙ্গে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা যাবে না। এসব জিনিসপত্র ব্যবহারের পর সাবানপানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে

যা মেনে চলবেন পরিবারের সদস্যরা

কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তি সর্বক্ষণ নিজের ঘরেই থাকবেন। বর্তমানে সুস্থ আছেন এবং ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার, অ্যাজমার মত দীর্ঘমেয়াদী রোগ যাদের নেই, এমন একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির পরিচর্যার দায়িত্ব নিতে পারেন। তবে তাকেও নিরাপত্তার নিয়ম মানতে হবে। কোয়ারেন্টাইনে আছেন এমন ব্যক্তির সঙ্গে কোন অতিথিকে দেখা করতে দেওয়া যাবে না

[the_ad id=”1270″]

কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে বা তার ঘরে ঢুকলে খাবার তৈরির আগে পরে, খাবার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, গ্লাভস পরার আগে খোলার পরে এবং যখনই হাত দেখে নোংরা মনে হবে তখন পরিচর্যাকারীকে নিয়ম মেনে হাত ধুতে হবে

খালি হাতে ওই ঘরের কোনো কিছু স্পর্শ করা যাবে না

কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির ব্যবহৃত বা তার পরিচর্যায় ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস, টিস্যু প্রভৃতি অথবা অন্য আবর্জনা ওই ঘরে ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে রাখতে হবে। পরে সেসব আবর্জনা উন্মুক্ত স্থানে না ফেলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে

— সংগৃহিত ( অনলাইন )