সুস্বাস্থ্য হলো সুন্দর জীবনের মূল চাবিকাঠি । সুস্বাস্থ্য পেতে হলে চাই পরিমিত আহার গ্রহণ এবং নিয়ম মেনে চলা। নিজের সামান্য একটু যত্ন, কিছু সুঅভ্যাস আপনাকে রাখতে পারে সুস্থ ও নীরোগ একজন মানুষ।
প্রয়োজনীয় কিছু সহজ কৌশলের মাধ্যমে সুস্বাস্থ্য রক্ষা করতে পারবেন । নিচের বিষয়গুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন –
[the_ad id=”1270″]
খালি পেটে পানি পান করুনঃ
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে পানি পান করুন। এতে আপনার শরীরের মেটাবলিজম ত্বরান্বিত হবে এবং ওজন বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা কমে যাবে। সম্ভব হলে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ২ চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। এতে আপনার পেটের যাবতীয় সমস্যা দূর হয়ে যাবে। পেট পরিষ্কার থাকবে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
দাঁত পরিষ্কার করুনঃ
আমরা প্রায় সকলেই ঘুম থেকে উঠে নাশতা করার আগে দাঁত ব্রাশ করি। আসলে সকালে দাঁত ব্রাশ করার নিয়ম হলো নাশতার পর দাঁত ব্রাশ করা। যদি আপনি রাতে দাঁত ব্রাশ করে ঘুমান, তাহলে নাশতা করার আগে শুধু কুলি করে নিন। এরপর নাশতা করার পর দাঁত ভালো করে ব্রাশ করে পরিষ্কার করুন। এতে আপনার মুখ ও দাঁত সারাদিনের জন্য পরিষ্কার থাকবে এবং নিঃশ্বাসেও খুব বেশি দুর্গন্ধ হবে না।
[the_ad id=”1270″]
ব্যায়াম করুনঃ
নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে করবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার পর নিয়মিত ব্যায়াম করুন। অল্প সময়ের ব্যায়ামেই আপনি পাবেন দীর্ঘমেয়াদী ফল। আপনি থাকবেন সারা দিনের জন্য ঝরঝরে এবং কর্মক্ষম। জোরে হাঁটা বা দৌড়ানো খুব ভালো ব্যায়াম। ঘুম থেকে ওঠার পর প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটতে পারেন। এছাড়া করতে পারেন হালকা কোনো ব্যায়াম।
পরিমিত বিশ্রামঃ
যদি আপনি ক্লান্ত ও উদ্বিগ্ন হয়ে থাকেন, চট করে ৫ মিনিটের বিরতি নিয়ে নিন। কিছুটা সময় ভারী শ্বাস-প্রশ্বাস নিন এবং মন শিথিলের কিছু কৌশল; যেমন- কল্পনায় নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। আপনার অবসাদ-ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। কাজের ফাঁকে বিশ্রাম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। এটা প্রমাণিত যে, মন শিথিলের এসব কৌশলসমূহ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
প্রচুর পানি পানঃ
শরীরের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশই পানি। সুতরাং পানি পান যে সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অন্যতম তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। দৈনিক ৮ গ্লাস পান করুন। এতে আপনার ত্বক মসৃণ থাকবে, কিডনি ভালো থাকবে এবং মূত্রনালির জটিলতা থেকে রেহাই পাবেন।
[the_ad_placement id=”adsense-in-feed”]
সকালে ভরপেট নাশতা করুনঃ
অনেকেই মোটা হয়ে যাবার ভয়ে সকালে ঠিকমতো নাশতা করেন না। এটা আসলে একটা ভুল ধারণা। বরং সকালে নাশতা না করলেই ওজন বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সকালে ভরপেট নাশতা করুন। এতে আপনার সারাদিনের কর্মক্ষমতা ঠিক থাকবে। দুপুরে ও রাতে অল্প পরিমাণে খেলেও সমস্যা হবে না। সকালের খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখুন।
চা বা কফি নাশতার পরে খানঃ
সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকেই খালি পেটে চা বা কফি খান। এটা খুবই খারাপ একটা অভ্যাস। এতে বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিশেষ করে ক্রনিক অ্যাসিডিটি বা আলসারের সূত্রপাত এভাবেই হয়। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্যেও এ অভ্যাস দায়ী। তাই সকালে নাশতা করার পর চা বা কফি খান।
বাড়তি চাপ এড়িয়ে যানঃ
স্বাস্থ্যকর জীবন মানে স্বাস্থ্যকর খাবার, সুনিদ্রা আর নিয়মিত ব্যায়াম। বাড়তি চাপ বাড়ায় করটিসোল হরমোন মান বিপাককে করে দেয় এলোমেলো। জীবনকে সহজ করুন। সহজ-সরল জীবনযাপন। ব্যায়াম, প্রকৃতির কাছাকাছি হাঁটুন, বেড়ান, গভীর শ্বাসক্রিয়া চর্চা করুন, ধ্যানচর্চা করতে পারেন।
অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ এড়িয়ে যাওয়া ভালোঃ
ঠান্ডা এবং ফ্লু ভাইরাস আক্রান্ত অনেকের ধারণা ঠান্ডা হলেই এ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে- যা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু এমনটি ভাবা ঠিক নয়। এ্যান্টিবায়েটিক জীবাণু ধ্বংস করে ঠিকই, কিন্তু অন্যদিকে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।
শরীরকে পুষ্টিকর খাবার দিয়ে পরিপুষ্ট করুনঃ
প্রকৃতি থেকে আহরণ করা খাবার খাবেন। কৃত্রিম প্রক্রিয়াজাত খাবর নয়। তাই হাটবাজার সওদা করুন, ঘরে রান্না করুন। পরিবারে সবাই মিলে খান। কচি মাংস, মাছ, ডিম, শাকসবজি, ফল, বীজ, স্বাস্থ্যকর চর্বি, মিষ্টি আলু খাওয়ার প্লেট হবে ছোট, ৯ ইঞ্চি ব্যাস। প্লেটের অর্ধেক ভরে থাকবে শাকসবজি একচতুর্থাংশে থাকবে মাছ-মাংস, ডিম এক চতুর্থাংশ থাকবে শর্করা। লাল চাল, লাল আটা, প্রচুর পানি সঙ্গে ফল, দধি।
[the_ad id=”1270″]
ফাস্টফুড, অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া খাবার ইত্যাদি খাবারের পরিবর্তে ফলমূল, শাকসবজি, মাছ, মুরগির মাংস ইত্যাদি খেলে অনেক সমস্যা এমনিতেই কমে যায়।
মনে রাখবেন – প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম, প্রতিরোধ করুন প্রতিকার নয়।