ডুমুর / তীন ফল

0
5803

ডুমুর বা ত্বীন ফল কয়েক শতাব্দী ধরে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কারণ এটি অনেক সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায় যে, এটি ডায়াবেটিক থেকে একজিমা এমনকি চিকিৎসা সংক্রন্ত বিভিন্ন উদ্বেগ জনিত রোগের চিকিৎসায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ত্বীন ফল মানুষের দ্বারা খাওয়া সবচেয়ে পুরাতন ফলগুলোর মধ্যে একটি। এ ফলে বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্যগত উপকারীতা রয়েছে।

প্রতি ৫ গ্রাম শুকনো ত্বীন ফলে বিদ্যমান উপাদানসমূহঃ:

-কার্বোহাইড্রেটঃ ০.৫ গ্রাম
-সুগারঃ ১.২২ গ্রাম
-ফাইবারঃ ১.৫ গ্রাম
-ফ্যাটঃ ১.৫ গ্রাম
-প্রোটিনঃ ০.৫ গ্রাম
-থায়ামিনঃ ১.৫ মিলি গ্রাম
-রিবোফ্লাভিনঃ ০.১২ মিলি গ্রাম
-নিয়াসিনঃ ১.৫ মিলি গ্রাম
-প্যান্টোথেনিক এসিডঃ ১.৫ মিলি গ্রাম
– ভিটামিন বি৩ঃ ৩.৫ মিলি গ্রাম
-ফোলেটঃ ৯ IEU
-ভিটামিন সিঃ ১.২ মিলি গ্রাম
-ক্যালসিয়ামঃ ১২ মিলিগ্রাম
-লৌহঃ ২.৫ মিলিগ্রাম
-ম্যাগনেসিয়ামঃ ৫ মিলিগ্রাম
-ফসফরাসঃ ৫ মিলিগ্রাম
-পটাসিয়ামঃ ১ মিলিগ্রাম
-জিংকঃ ১.৫ মিলিগ্রাম
-শক্তিঃ ২০ কিলোক্যালোরি

উপরোক্ত উপাদান গুলো মানষের শরীরের জন্য খাদ্য তালিকায় থাকা অত্যাবশ্যক।

[the_ad_placement id=”paragraph”]

স্বাস্থ্যকর উপকারী দিকঃ:

✪ডুমুরের ফ্যাট থাকায় এতে প্রচুর পটাশিয়ামের উপস্থিতি থাকে যা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

✪এটি রক্তে ক্ষতিকর চিনির পরিবর্তে প্রাকৃতিক চিনি তৈরী করে বলে তা ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে।

✪ডুমুর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। নিয়মিত ডুমুর খেলে কোলন ক্যান্সার হবার ঝুঁকি কম থাকে। কারণ ডুমুরে বিদ্যামান ফাইবার দ্রুত শরীর বর্জ্য পদার্থ দূর করে দেয়া যার ফলে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে দারুণ ভূমিকা রাখে।

✪ সাম্প্রতিক গবেষণা ইশারা দেয় যে ডুমুর স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। ৫%  মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের সম্ভবনা কম দেখা গেছে কারণ ডুমুরের  ত্বকে ফাইবার আছে এবং এটি তাদের খাদ্য তালিকাতে রয়েছে।

✪ ডুমুর দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। তাছাড়া এটি বাচ্চাদের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির জন্য অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান।

✪ডুমুর হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। ডুমুরের এন্টিঅক্সিডেন্ট রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি শরীরের ফ্রি রেডিক্যাল দূরীভূত করে যা করোনারী ধমনী গুলোকে ব্লক করে  যেটা করোনারী হৃদরোগে অগ্রণী  ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ডুমুরে পটাসিয়াম, ওমেগা-৩ এস এবং ওমেগা-৬ এস এর উপস্থিতি হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।

✪ইনসুলিনের উপর নির্ভরশীল ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ডুমুর ফল খুব উপকারী। শুধমাত্র ফল ই নয়, এর পাতাও স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। ডুমুরের পাতায় অসাধারণ গুণাবলি রয়েছে যা আপনার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

✪ গর্ভবতী মা ও শিশুর রক্তশূন্যতা থেকে রক্ষা করে।শরীরের লৌহের ঘাটতির কারণে লৌহের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।শুকনো ত্বীন বা ডুমুরে আয়রণ বা লৌহ থাকে যা হিমোগ্লোবিনের মূল উপাদান। শুকনো ডুমুর খেলে রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বেড়ে যায়।

✪ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে

✪ ডুমুর ফল বিশেষ করে মুখ,জিহ্বা ও ঠোট ফাটার সমস্যা নিরাময় করে।

✪অত্যাধিক ফাইবার থাকায় ডুমুর কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলস প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

✪ ত্বকীয় এই ফল আমাদের শারীরিক ও মানসিক অবসাদ দূর করতে সহায়তা করে।

✪গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ডুমুর হাঁপানী ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগের চিকিৎসায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।ডুমুর মিউকাস ঝিল্লী কে আর্দ্র   রাখে এবং কফ নিঃসরণ করে বলে হাঁপানীর লক্ষণ  থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।এর ফাইটোকেমিক্যাল যৌগ ফ্রি রেডিকলের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাই আমাদের হাঁপানী হয়না।

✪ যাদের দুধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাবারে সমস্যা বা নিষেধ রয়েছে তারা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে ফ্যাটযুক্ত ফল খান। কারণ হল ডুমুরে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট রয়েছে।

✪নিয়মিত ডুমুর সেবন উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করে।যখন আপনি বেশি সোডিয়াম কিন্তু কম পটাশিয়াম খাবেন তখন শরীরে  সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ভারসাম্য বাধাগ্রস্ত হবে যা উচ্চরক্তচাপ কে  প্রভাবিত করবে বা পথকে সুগম করবে।ডুমুরে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম আছে বলে এটি এই ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে।

✪ ডুমুরে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা হাড়ের সুস্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।এটি হাড়ের পুরুত্বের উন্নতি সাধন করে এবং হাড় ক্ষয় রোধ করে যা আপনার যে কোন শুরু বয়সেই হতে পারে।

✪নারী ও পুরুষের যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে।ডুমুরকে যৌবন উর্বরতা ও যৌন শক্তির সম্পূরক হিসেবে মনে করা হয়।এগুলোতে  প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, লৌহ ও জিংক রয়েছে।এছাড়াও এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও খনিজ পদার্থ রয়েছে যা যৌন হরমোন এন্ড্রোজেন ও ইস্ট্রোজেন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন।

✪শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট হ্রাস করে।